অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করার আইডিয়া | অল্প পুঁজির লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া – business ideas with little capital

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া খুঁজে থাকেন। প্রথম অবস্থায় পুজি কম থাকার কারণে এই ব্যবসা আইডিয়া গুলো দরকার হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যে ব্যবসাগুলো অল্প টাকায় করা যায় এবং খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এখান থেকে ভালো টাকা আয় করা যায়।যারা ব্যবসা নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখে থাকেন কিন্তু কম পুজির কারণে করতে পারেন না তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। নিচে অল্প পুঁজির সেরা কয়েকটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরা হলো:-

অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করার আইডিয়া - অল্প পুঁজির লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া  - business ideas with little capital - bddraft.com

অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করার আইডিয়া – অল্প পুঁজির লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া  – business ideas with little capital – bddraft.com

অল্প পুঁজির লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া 

ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তাহলে প্রথম অবস্থায় অল্প পুঁজির ব্যবসা গুলি শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাগুলো করার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে পুঁজি বাড়িয়ে ব্যবসাটি বড় করতে পারবেন। নিচে বর্তমান সময়ে লাভজনক দশটি অল্প পুঁজির ব্যবসা আইডিয়া তুলে ধরা হলো:-

১.মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসা 

অল্প পুঁজির ব্যবসা আইডিয়া যদি খুঁজে থাকেন তাহলে মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। কেননা বর্তমান সময়ের এই ব্যবসাটির চাহিদা বেড়েই চলেছে। মানুষ এখন স্মার্টফোন আগের তুলনায় অনেক বেশি ব্যবহার করতেছে।

স্মার্টফোন ব্যবহার করতেছে বলে মোবাইল রিচার্জ করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কথা বলতে হয় ও ডাটা ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালাতে হয়। তাই এক্ষেত্রে মোবাইল রিচার্জ এর দোকানগুলোতে যাওয়া লাগে।মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম লেনদেন করার জন্য বিকাশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই বর্তমান সময়ে যদি ভালো একটি স্থান দেখে মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশের একটি দোকান দিতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো কিছু করা সম্ভব। 

২.ফেসবুক পেজ তৈরি করে প্রোডাক্ট বিক্রির ব্যবসা 

বর্তমানে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও এখন প্রোডাক্ট বিক্রির হার বৃদ্ধি পেয়েছে।তাই অল্প পুঁজির ব্যবসা যারা খুজতেছেন তারা facebook পেজ তৈরি করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারেন।ফেসবুকে আপনার একটি প্রোফাইল থাকলেই একটি বিজনেস পেজ তৈরি করতে পারবেন।পেজ তৈরি করা হয়ে গেলে পেজটি সুন্দরভাবে কাস্টমাইজেশন করে নিতে হবে এবং তারপর আপনি যে ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চান তার মার্কেটিং করতে হবে।

অর্থাৎ আপনি চাইলে এক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক মার্কেটিং করতে পারেন অথবা সারা বাংলাদেশ বুষ্ট করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার ফেসবুক পেজে অনেক ফলোয়ার চলে আসবে এবং আপনি সেখানে নিত্য নতুন প্রোডাক্টের বিবরণ ও এগুলো কেনার সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করবেন। প্রোডাক্ট দেখে যদি ক্রেতাগণ আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অর্ডার করবে। এভাবে যদি বিশ্বস্ততার সাথে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই এখান থেকে ভালো কিছু করতে পারবেন। 

৩.মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের ব্যবসা 

আপনার যদি আগে মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের ট্রেনিং নেওয়া থাকে তাহলে এই কাজটি শুরু করতে পারেন।এই কাজে যারা দক্ষ তাদের ভালো কদর রয়েছে।বর্তমান সময়ে একটি ভালো স্থান দেখে যদি মোবাইল ও কম্পিউটার মেরামতের দোকান দেওয়া যায় এবং দোকানটি যদি মানুষের কাছে পরিচিত করে তোলা যায় তাহলে এখান থেকে প্রতিদিন ভালো টাকা আয় করা সম্ভব। কেননা একটি মোবাইল মেরামত করলে কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পাওয়া যায়। মোবাইল মেরামতের থেকে কম্পিউটার মেরামত করতে পারলে তাদের আয় আরো অনেক বেশি হয়ে থাকে।একটি উইন্ডোজ সেটআপ করে দিলেই স্থান ভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পাওয়া যায়।তাই ব্যবসা করার জন্য যদি অল্প পুজি হয়ে থাকে তাহলে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন । 

৪.কোচিং সেন্টার চালু করতে পারেন 

কোচিং সেন্টার মানেই সেখানে পড়াশোনা করানো নয়। কোচিং সেন্টারে বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। কোচিং সেন্টারে সাধারণত নাচ, গান, কবিতা আবৃতি, ও শরীরচর্চা বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে খুলতে পারেন। যদি কোচিং সেন্টারটি সঠিকভাবে চালানোর মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে যেতে পারেন তাহলে ছাত্র-ছাত্রীর অভাব হবে না। পরবর্তীতে আপনি চাইলে তখন কোচিং সেন্টারটি অনলাইনে নিয়ে যেতে পারেন এবং এখান থেকে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। কোচিং সেন্টার চালু করার জন্য একটি ভালো স্থান দেখতে হবে এবং যে বিষয় নিয়ে সেন্টারটি চালু করতে চান অভিজ্ঞ লোক দেখতে হবে। 

৫.হস্তশিল্পের ব্যবসা অল্প পুঁজির ব্যবসা আইডিয়া 

প্রাচীন বাংলা থেকেই আমাদের দেশে হস্তশিল্পের ব্যাপক কদর রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মাটির তৈজসপত্র, হাতপাখা, শীতলপাটি, ও কারুকার্য করা চাদরের অনেক চাহিদা রয়েছে। আর এই ব্যবসা শুরু করার জন্য অনেক বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না যা এই ব্যবসা একটি বড় সুবিধা। হস্তশিল্পের ব্যবসাটি শুরু করার জন্য একটি দোকান হলে খুবই ভালো হয়।যদি দোকান দেওয়ার মত সামর্থ্য না থাকে তাহলে আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে এই ব্যবসাটি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। অনলাইনের মাধ্যমে সঠিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে হস্তশিল্প বিক্রি করা যেতে পারে। আর যদি এই পদ্ধতি অবলম্বন না করেন তাহলে সরাসরি যেই সকল দোকানে হস্তশিল্পের পণ্য বিক্রি করে থাকে তাদেরকে সরাসরি পাইকারি রেটে পণ্য দিতে পারেন।

৬.ফুলের ব্যবসা

অল্প পুঁজির ব্যবসা করতে চাইলে ফুলের ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে। কেননা বাংলাদেশে ফুলের একটি বড় বাজার রয়েছে। ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বিভিন্ন উৎসব আসলে দেশে ফুলের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তখন অনেক স্থানে ফুল পাওয়া যায় না।তাই একটি দোকান ভাড়া করে ভালো একটি স্থান দেখে ফুলের দোকান দিতে পারেন। বিশেষ করে কলেজ বা ইউনিভার্সিটির আশপাশে এই দোকান দিলে ফুল বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। দোকান দেওয়া হয়ে গেলে ফুল নিয়ে দোকানে সাজিয়ে রাখতে হবে। যদি আপনার দোকানটা পরিচিতি পেয়ে থাকে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই এই ব্যবসা থেকে ভালো লাভ করে নিতে পারবেন।

৭.ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা 

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশে জন্মদিন থেকে শুরু করে বিবাহ বার্ষিকী সহ অনেক ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসার মাধ্যমে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোর কাজের দায়িত্ব নেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া এই ব্যবসাটি অনেক কম টাকার মধ্যেই শুরু করতে পারবেন।তবে এই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। সর্বপ্রথম আপনাদেরকে পরিপূর্ণভাবে মার্কেটিং করতে হবে যার মাধ্যমে মানুষকে বোঝাতে হবে যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ আপনারা করতে পারেন। তাছাড়া সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে যাতে করে কোন ধরনের বিভ্রান্তির বা অনুষ্ঠানে কোন ত্রুটি না ঘটে। তাহলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসার মাধ্যমে নিজের ব্যবসায়িক ক্যারিয়ার গড়ে তোলা যাবে। 

৮.কফিশপ তৈরি করে ব্যবসা 

অবসর সময়ে অনেকেই চা কফি খেতে পছন্দ করেন।তাই নির্জন একটি স্থানে বসে আমরা চা-কফি খাওয়ার জন্য অনেকেই চলে যাই কফি শপের দোকানে।তাই ভালো একটি স্থান দেখে বর্তমানে যদি একটি কফি শপের দোকান দেওয়া যায় তাহলে মন্দ  হয় না।আমার পরিচিত একজন কফি শপের দোকান দিয়ে মাসে লক্ষ টাকার উপরে ইনকাম করে থাকেন। আপনার দোকানের কফি যদি অনেক ভালো হয়ে থাকে তাহলে কাস্টমাররাই দোকানের মার্কেটিং করে দিবে। আর একবার যদি দোকানটি জনপ্রিয় করে তুলতে পারেন তাহলে আর এখান থেকে পিছনে ফিরে তাকানো লাগবে না। তাই অল্প পুঁজির ব্যবসা আইডিয়া যদি খুঁজে থাকেন তাহলে কফি শপের দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

৯.চুলের ব্যবসা 

অল্প পুঁজিতে বাড়িতে ব্যবসা করতে চাইলে চুলের ব্যবসা করা যেতে পারে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে অনেকেই এই ব্যবসাটি করছে।এখানে আপনার কাজ হবে যারা চুল ফাটানোর জন্য স্থান খুঁজে থাকে তাদেরকে একটি স্থান খুঁজে দেওয়া এবং সেই স্থানে চুল ফাটানোর কারখানা তৈরি করা।তাছাড়া আপনারা সরাসরি মহাজনের কাছ থেকে ২০ কেজি অথবা ৩০ কেজি চুল নিয়ে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চুল ফাটানো কাজ শিখিয়ে দিতে পারেন। তাহলে এখান থেকে মহাজনের কাছ থেকে কেজিতে কমিশন পাবেন। এইভাবে যত বেশি চুল ফাটাতে পারবেন মহিলাদের দিয়ে ইনকামের পরিমাণ তত বেশি হবে।

১০.অনলাইনে রিসেলার হয়ে ব্যবসা 

অনলাইনে অনেক প্রোডাক্ট কেনাবেচা হয়ে থাকে। যেমন ধরুন ওয়েবসাইট বিক্রি, youtube চ্যানেল,ডলার বেচাকেনা আরো অনেক উপায় রয়েছে যেগুলোর রিসেলার হিসেবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।অনলাইনে আপনি যে বিষয়ে রিসেলার হয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান সেই বিষয়টা সম্পর্কে সর্বপ্রথম পড়াশোনা করে নিতে হবে। ধরুন আপনি youtube বিষয়ে অনেক ভালো বোঝেন আপনি youtube চ্যানেল তৈরি ও মনিটাইজেশন চ্যানেল বিক্রি করে, অথবা কারো কাছ থেকে মনিটাইজেশন চ্যানেল কিনে আরেক জায়গায় বিক্রি করে কমিশন খেতে পারেন। এভাবে খুবই অল্প পুঁজিতে অনলাইনে রিসেলার হয়ে ব্যবসা করা যায়। 

শেষকথা, আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে অল্প পূজির লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া বা অল্প পুঁজিতে কোন ব্যবসা গুলি করা যায় এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরণের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

Leave a Comment